বিড়াল – আমাদের
সবার কাছেই বেশ পরিচিত একটি পোষা প্রাণি। অনেকেই মনে করেন বিড়াল পোষা বেশ কষ্টসাধ্য একটা ব্যাপার। অথচ
বিড়াল পালন তুলনামূলকভাবে সহজ । বিড়াল নিজেই নিজের শরীর ও পশম পরিষ্কার রাখে।
বিড়ালকে খেলার
জন্য যথেষ্ট সময় দিতে হয়। বিড়ালকে খেলনা
দিন খেলার জন্য। বিড়াল শুধু পালন করলেই হবেনা । বিড়াল সম্পর্কিত সব খুঁটিনাটি বিষয়
মনে রাখতে হবে। চলুন জেনে নিইঃ
১) বিড়াল পোষার
প্রথম শর্ত হল আপনার বাড়ির সকলে বিড়াল পছন্দ করে কিনা তা জেনে নিন। কারণ বিড়াল
যত্নশীল পরিবেশে থাকতে বেশি পছন্দ করে।
২) বিড়াল আনার
আগে বাসাকে ক্যাটপ্রুফ করতে হবে। দরজা, জানালা, ওয়াশরুমের ভেন্টিলেটর মানে সব
সম্ভাব্য পথ যেগুলো দিয়ে বিড়াল ঘরের বাইরে যেতে পারে সেগুলোতে নেট ব্যবহার করে
বন্ধ রাখতে হবে।
৩) বাসার
নির্দিষ্ট একটি কোণা বা শুকনো স্থানে বিড়ালের পায়খানা , প্রস্রাব করার ব্যবস্থা
করে দিন। একটি বড় গামলায় বা বাক্সে শুকনো পেপার বা বালি দিয়ে রাখতে পারেন। এছাড়া
পোষা প্রাণিদের জন্য কিছু আলাদা শপ আছে ওখানে লিটারবক্স পাওয়া যায়।
৪) বৈদ্যুতিক
নানা সরঞ্জাম থাকলে সেগুলোকে গুছিয়ে রাখুন। আর বৈদ্যুতিক প্লাগ বা তার এর পাশে যেন
পানি না পড়ে বা ভেজা না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।
৫) বারান্দায় যদি
গাছপালা থাকে তাহলে তাতে কিছু ঘাসও জন্মান। কারণ বিড়াল অনেক সময় প্রয়োজন হলে ঘাস
খায় এবং বিষাক্ত পদার্থ বমি করে দেয়।
৬) গাছের টব এ
যদি ফার্ণ জাতীয় গাছ রাখতে চান তাহলে অ্যাসপ্যারাগাস ব্যতীত অন্য জাতের ফার্ণ
রাখতে পারেন।
৭)বিড়ালের বয়স
তিন মাস হলে জলাতঙ্কের টিকা দিতে হবে।
৮) বিড়ালকে পরিষ্কার পানি খেতে দিন। পরিষ্কার পাত্রে করে
সবসময় পানি রাখুন ও প্রয়োজনে বদলে দিন।
৯)বিড়ালকে খাওয়ানোর সময় মুখের এক পাশ থেকে খাওয়াবেন বিশেষ
করে তরল খাদ্য বা ঔষধ জাতীয় খাদ্য।
১০) বিড়ালের খাবার পাত্র ও স্থান সবসময় পরিষ্কার রাখুন।
১১) বিড়ালের বয়স ছয় মাস হওয়ার আগে কখনো নখ কাটবেন না। আর
খুব বেশি বা গভীরভাবে কাটবেন না কখনো। কারনে এতে নার্ভ এর ক্ষতি হয়ে বিড়ালটি মারা
পর্যন্ত যেতে পারে।
১২) বাসাবাড়িতে তেলাপোকা বা ইঁদুরের ঔষধ দিবেন না।
অসাবধানতাবশতঃ বিড়াল খেয়ে ফেলতে পারে।
১৩) আপনার বিড়ালকে সবসময় আমিষজাতীয় ও স্নেহজাতীয় খাবার বেশি
করে খেতে দিন।
১৪) বিড়ালকে ভীতিমুক্ত রাখুন। কোলাহলপূর্ণ পরিবেশ বিড়াল
পছন্দ করেনা। তাই একটু উঁচু কোনো স্থানে যেখানে ঝামেলা ও কোলাহল পৌঁছায়না সেখানে বিড়ালের থাকার জায়গা করে দিন।
১৫) বিড়ালের আচরণের দিকে খেয়াল রাখুন। যদি আপনার বিড়ালের
মধ্যে আচরনগত কোনো পরিবর্তন দেখতে পান তাহলে বুঝে নিবেন আপনার বিড়ালটি কোনো
অসুস্থতায় ভুগছে।
১৬) সময়মতো আপনার বিড়ালকে সব ধরনের প্রতিষেধক টিকা দিন।
১৭) বিড়াল রেখে যদি বাইরে যান তাহলে অবশ্যই ঘরে পর্যাপ্ত
খাবার ও পানি রেখে যাবেন। গরমকালে চার-পাঁচ ঘন্টা থাকলে ঘরে তৈরী খাবার নষ্ট হয়ে
যায়। তাই বিড়ালকে শুষ্ক খাবার যেমন – ক্যাটফুড খাওয়ার অভ্যাস করাতে পারেন।
১৮) আপনার বিড়ালের কোনো নির্দিষ্ট খাবারে বা জিনিসে এলার্জি
আছে কিনা খেয়াল রাখুন। অনেক বিড়ালের রেড মিট বা চিংড়িতে এলার্জি থাকে।
১৯) যদি দীর্ঘসময়ের
জন্য বিড়ালকে রেখে কোথাও যেতে চান তাহলে নিরাপদ ও পরিচিত কারো কাছে রেখে যাবেন
যাতে তার খাদ্যাভ্যাস ও থাকায় কোনো সমস্যা না হয়।
২০) বিড়াল অন্ধকার ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে থাকা পছন্দ
করেনা। তাই বিড়ালকে যদি রেখে যান তাহলে বাসায় লাইট জ্বেলে রাখবেন।
উপরোক্ত বিষয়গুলো মনে রাখলে বিড়াল পালন করাটা অনেক সহজ হয়ে
যায়।