প্রাচীনকাল থেকেই গয়নার
কদর সবসময়ই বেশি । রাজারানীদের পরনের দামী ও ভারী গয়নার প্রচলন ছিলো আদিকাল থেকেই।
সৌন্দর্য ও সাজের মান বৃদ্ধির জন্যই গয়না পড়া ছিলো আবশ্যক।
একসময়ের সোনা, রুপা বা
দামী পাথরের গয়না থেকে বেড়িয়ে এখন এন্টিক, কাঠের, মাটির ইত্যাদির গয়নার প্রচলনই
বাড়ছে দিন দিন। সময়ের পরিবর্তনের সাথে
সাথে মানুষের রুচি ও ফ্যাশানেরও পরিবর্তন হয়ে থাকে। সবসময় সবখানে ভারী গয়না পড়ার
ইচ্ছা হয়না বেশিরভাগ নারীদেরই। হাল্কা কিন্তু দেখতে রুচিশীল গয়নার প্রতি আকর্ষন
তাই বেড়েই চলছে।আজ আমরা জেনে নিবো এন্টিক ও কাঠের গয়না নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ
বিষয়।
এন্টিকের গয়নাঃ
বর্তমানে সোনা বা রুপার
পরিবর্তে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে সিলভার গয়না। জার্মান সিলভার নামে পরিচিত হলেও গয়নার
রঙেও থাকতে পারে ভিন্নতা। সোনালী, রুপালী, অক্সিডাইজ ইত্যাদি রঙের জার্মান সিলভার
জুয়েলারি পাওয়া যায়।ডিজাইনে বৈচিত্র্য আনতে এগুলোর সাথে বিভিন্ন রঙ বেরঙের ও ধরনের
পুঁতি ব্যবহার করা হয়।
এন্টিক গয়নার যত্নঃ
এন্টিকের গয়না যত্ন করতে
হয়। নয়তো এর বর্ণ কালচে হয়ে যায়। তাই এন্টিকের গয়নার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মনে
রাখা জরুরীঃ
১)অন্যান্য গয়নার সাথে
এন্টিকের গয়না রাখা উচিত না। অন্য মেটাল যেমন- সোনা, রুপা, গোল্ড প্লেটেড , কাঠের
গয়নার সাথে সিলভার এন্টিকের গয়না এক বক্সে রাখলে মেটালগুলোর মধ্যে বিক্রিয়া হয় এবং এদের রঙ বিবর্ণ হয়ে যায়।তাই আলাদা আলাদা
বক্সে গয়না রাখাই উত্তম।
২)গয়নাকে টয়লেট টিস্যু
দিয়ে পেঁচিয়ে রাখতে চেষ্টা করবেন। কারন অন্যান্য টিস্যু থেকে টয়লেট টিস্যুর শোষন
ক্ষমতা বেশি। টয়লেট টিস্যু না থাকলেও ফেসিয়াল টিস্যুতেও রাখতে পারেন।
৩)গয়না সবসময় এয়ারটাইট
বক্সে রাখাই উত্তম। বক্সটি শুষ্ক স্থানে রাখবেন এবং খেয়াল রাখবেন যেনো বক্সের
ভেতরে ভেজা না থাকে।
৪)মাঝেমাঝে গয়নার বক্স
খুলে চেক করবেন। এতে যদি ভুলক্রমে কোনো গয়না বিবর্ণ বা নষ্ট হতে শুরু করে তবে তা
যেন দ্রুত ঠিক হয়ে যায়।
৫) শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত
কক্ষে গয়না সংরক্ষন না করাই উত্তম। আর যদি রাখেন ও খেয়াল রাখবেন বক্সের মুখ যেনো
ভালোভাবে বন্ধ থাকে এবং কখনো খুললেও দীর্ঘক্ষন খোলা রেখে দিবেন না।
৬) এন্টিকের গয়নাটি কালচে
হয়ে গেছে? হালকা কোনো সুতির কাপড় দিয়ে ঘষুন। কালচে ভাব কমে আসবে।
৭) গয়নার কালচে ভাবটি গাঢ়
হয়ে গেছে? কাপড় দিয়ে ঘষেও যাচ্ছেনা? চিন্তার কোনো কারন নেই। টুথপেস্ট দিয়ে
আলতোভাবে ব্রাশ দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করে নিন। খেয়াল রাখবেন টুথপেস্টের পরিমাণ যেনো
বেশি না হয়।কারন বেশি টুথপেস্ট ব্যবহার করলে সিলভার সাদাটে হয়ে যেতে পারে।
৮) চাইলে সামান্য
ডিটারজেন্ট মেশানো পানিতেও ধুয়ে ফেলতে পারেন গয়নাটি। এতেও পরিষ্কার হয়ে যায়।
উপরোক্ত বিষয়গুলো মনে
রাখলেই আপনার এন্টিক বা সিলভার এর গয়নাটি অনেকদিন পর্যন্ত নতুনের মতো থাকবে।
কাঠের গয়নাঃ
চাকচিক্যময় গয়নার
পাশাপাশি কাঠের তৈরী সাধারন ছোট গয়না পড়তে এখনকার নারীরা বেশ পছন্দ করেন। কাঠের
গয়না অনেকটা ফ্রেমের মতো কাজ করে।এতে মনের মাধুরী মিশিয়ে ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা যায়। হাতে
বানানো জ্যামিতিক নকশার নানা গয়নাগুলো শাড়ি, থ্রি পিস এর সাথে খুব সুন্দর মানায়।
কাঠের গয়নার যত্নঃ
১) কাঠের গয়না অন্যান্য
গয়না থেকে আলাদা রাখতে হয়। এন্টিক বা মেটালের যেকোনো গয়নার সাথে এক বক্সে রাখলে
এগুলো কাঠ থেকে রঙ শুষে নেয়। এতে উভয় গয়নাই নষ্ট হয়ে যায়।
২) এয়ারটাইট বক্স বা
পলিথিনে মুড়ে আলাদা করে রাখুন।
৩) আর্দ্র বা ভেজা কিছুতে
রাখবেন না। গয়নাতে যাতে পানি না লাগে সেটি খেয়াল রাখুন।
কাঠের গয়না অন্যান্য
গয়নার তুলনায় হাল্কা হওয়াতে এটির কিছু সুবিধাও আছে। দূরে কোথাও যাওয়ার সময় এটি বহন
করা সহজ। এটি পরিবেশ বান্ধব।খুব বেশি চাকচিক্যপূর্ণ না হওয়ায় এটি বাইরে বেড়াতে
কিংবা ছোটখাটো অনুষ্ঠানে পড়া যায়।