আমাদের শরীরে “স্ট্রেস রেসপন্স” বলে একটি ব্যাপার থাকে। আমাদের শরীর যখন মনে করে যে আমরা কোনো বিপদে আছি তখন শরীরের ভেতর বিশেষ একটি প্রক্রিয়া সচল হয়ে যায়। শরীরে করোনার সংক্রমন হলেও “স্ট্রেস রেসপন্স” সচল হয়ে যায়। কিন্তু যদি রোগীর আগে থেকে অন্য কোনো রোগ থাকে যেমনঃ ডায়াবেটিস, ক্যান্সার ইত্যাদি তাহলে শরীর কিছু বুঝে ওঠার আগেই অনেক বেশি আক্রান্ত হয়ে যায়।
কোভিড-১৯ সংক্রমণের দুটো সমস্যার দিক রয়েছে। এর প্রথমটা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়া। কোনো রোগীর যদি আগে থেকেই ডায়াবেটিস থেকে থাকে, বা কেমোথেরাপি হয়েছে, কিম্বা বার্ধক্যজনিত কারণে তাদের দেহের রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা কম, তাহলে ভাইরাসের জন্য সেটা একটা পরম সুযোগ। ভাইরাস তাদের শরীরে প্রবল বিক্রমে ছড়াতে থাকে, কারণ তাদের দেহে রাশ টেনে ধরার ক্ষমতা নেই।
দ্বিতীয় সমস্যাটা হলো “সাইটোকাইন স্টর্ম”, যেটা সংক্রমণের ৮-১০ দিন পর থেকে শুরু হয়। আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধের তন্ত্র অতি-সক্রিয় ভাবে ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করা শুরু করে দেয়। এই অতি-সক্রিয়তার দরুণ দেহে প্রদাহজনক ধারা ( inflammatory
cascades ) তৈরি হয় আর তার ফলেই দেহের আরও ক্ষতি হয়। শরীরের 'স্ট্রেস রেসপন্স' সাধারণত এই অতি-সক্রিয়তাকে নিয়ন্ত্রণ করে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনে। কিন্তু যাদের শরীর আগে থেকেই অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত, তাদের দেহে এই নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা অনেক কম।
করোনা পরিস্থিতিতে নিজের ও নিজের পরিবারের সকলকে সুস্থ রাখতে কিছু ব্যাপার জেনে রাখা আবশ্যক। করোনার প্রকোপ বেড়ে গেছে অনেকাংশে। তবে এ নিয়ে আতংক না ছড়িয়ে বা নিজে আতংকিত না হয়ে সচেতন হওয়াটাকেই জরুরী মনে করছেন অভিজ্ঞরা।
তাই করোনা প্রতিরোধে আমাদের অবশ্য করনীয় বিষয়গুলো হলঃ
• সাবান, স্যানিটাইজার ও জীবাণুনাশক দিয়ে ভাল করে হাত ধুয়ে নিন।
• হাঁচি বা কাশি দেয়ার সময় অবশ্যই রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করুন।
• ব্যবহৃত টিস্যু ডাস্টবিনে ফেলুন এবং হাত ধুয়ে নিন।
• হাত না ধুয়ে চোখ, মুখ, নাক স্পর্শ করবেন না।
• অসুস্থ লোকজনের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন।
• সব ধরনের ভীড়, জনসমাগম এড়িয়ে চলুন।
মাস্ক পড়ার কোনো বিকল্প নেই। তাই মাস্ক পড়ুন। সতর্ক থাকুন ও সুস্থ থাকুন। নিজের পরিবারকে সুস্থ রাখুন।
করোনা আক্রান্তের হার আগের চাইতে পুনরায় বাড়াতে বর্তমান দেশের সার্বিক পরিস্থিতি অনেকটাই নাজুক হয়ে পড়ছে । এই আক্রান্তের সংখ্যাটা আরো বেশি বাড়ার আগে সরকার পুনরায় লকডাউন ঘোষনা করতে চলেছে। আগামী ২৮ জুন ২০২১, সোমবার থেকে সারাদেশে কঠোর লকডাউন ও সেনাবাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিছে সরকার। এক তথ্য বিবরণিতে জানানো হয়, লকডাউনে জরুরি পরিষেবা ছাড়া সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী যানবাহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। কেবল অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। ভারতের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে
আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বিভিন্ন জেলাগুলোতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বিধায় করোনা বিষয়ক
জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি (এনটিএসি)-এর পরামর্শে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে
সরকার।
লকডাউনের সময়টিতে ঘরে থাকুন। খুব বেশি প্রয়োজন
ছাড়া ঘরের বাইরে যাওয়া পরিহার করুন।