ই-কমার্স বিষয়টা আমাদের সকলের কাছেই বেশ পরিচিত ।
ইন্টারনেটে সক্রিয় লোকজনের কাছে তাদের পছন্দের পণ্য, সার্ভিস ইত্যাদি পৌঁছে দেওয়াই
হল ই-কমার্সের কাজ।
ই-কমার্সের ধাপ অনুসারে –ওয়েবসাইট
তৈরি, এসইও করা, কন্টেন্ট তৈরি , সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করা ইত্যাদি করতে হয় ।
ধাপগুলো সম্পন্ন হওয়ার পর চিন্তা আসে পণ্য বা সার্ভিস নিয়ে। আপনি কি পণ্য নিয়ে কাজ
করতে চান তা খুঁজে নেওয়া , পণ্য কোথায়
পাবেন এগুলো নিয়ে চিন্তা করতে হয়। আপনি পণ্য তিনভাবে পেতে
পারেন- নিজে পণ্য তৈরি করতে পারেন, পণ্য কারো কাছ থেকে কিনতে পারেন, অথবা কারো
পণ্য নিয়ে প্রমোটর বা ডিস্ট্রিবিউটর এর কাজ করতে পারেন।
পণ্য নিজের হাতে তৈরী করে
বিক্রি করলে লাভ বেশি হয় তবে কিছুটা ঝুঁকিও থাকে। নিজের তৈরি করা পণ্য বিক্রি করতে
চাইলে প্রথমে বেশি টাকা খরচ হয়। নিজের তৈরি করা পণ্য বিক্রি করার ক্ষেত্রে পণ্যের
গুণগত মান ঠিক রাখা এবং সব ধরনের ঘাটতি পূরণ করার দায়িত্ব নিজেকে নিতে হয়। আমাদের দেশের শতকরা ৯৫ ভাগ দোকানীরাই অন্যের
কাছে থেকে পণ্য কিনে বিক্রয় করে। ই-কমার্সের ক্ষেত্রেও এই ধারায় পরিচালনা করা
যায়। আপনার নির্ধারিত পণ্য কোনো পাইকারি
দোকান থেকে সংগ্রহ করে তারপর আপনার পেইজ
বা সাইটে আপলোড করতে পারেন। আর যদি অন্য কারো পণ্যের ডিস্ট্রিবিউটর হতে চান বা
অন্যের পণ্য প্রোমোট করার মাধ্যমে ব্যবসা করতে চান তবে এক্ষেত্রে আপনার লাভ হবে খুব
কম। অন্য কারো পণ্য বিক্রয় করে দিতে পারলে আপনি যে কমিশন পাবেন সেটাই হবে আপনার
লাভ।
ই-কমার্স ক্ষেত্রে যেসব
বিষয় মনে রাখা উচিত –
১) পণ্যের গুণগত মান হচ্ছে সফল ব্যবসায়ের প্রথম শর্ত। অনলাইনে
মানুষ পণ্য দেখে কিনতে পারেনা, ছবি দেখে কিনতে হয়। তাই পণ্যের গুণগত মান যেনো ঠিক
থাকে সে বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
২) গ্রাহক বা কাস্টমারের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। যে পণ্য অর্ডার করবে
তার পেমেন্ট ক্লিয়ার করে সঠিক সময়ে গ্রাহকের হাতে পৌঁছাতে হবে।
৩) আপনার পেইজে বা সাইটে যেনো
বিভিন্ন ধরনের পণ্য মজুদ থাকে তা লক্ষ্য রাখতে হবে। শেষ হয়ে গেলে তা নতুন করে এনে স্টক করা বা সম্ভব
না হলে সরিয়ে ফেলতে হবে।
৪) আপনার গ্রাহক কি কিনতে বা জানতে চায় তা আগে ভালোভাবে বুঝতে
চেষ্টা করুন। আপনার ব্যবহার এবং পণ্যের গুণগত মান দেখেই কিন্তু গ্রাহকসমাজে আপনার গ্রহণযোগ্যতা
বাড়বে।
৫) কোনো গ্রাহক যদি আপনার
সাথে খারাপ ব্যবহার করে বা পণ্য কেনার পর ত্রুটি দেখায় তবে শান্তভাবে তা সমাধান
করুন।
৬) গ্রাহকের হাতে পণ্য
পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত পণ্য সম্বলিত সব আপডেট দিতে থাকুন।
পণ্য নির্ধারণ, সংগ্রহ ,
গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ এর পরে আসে পণ্য ডেলিভারি নিয়ে চিন্তা। যে মাধ্যমে পণ্য
ডেলিভারি দিলে আপনার এবং গ্রাহকের সুবিধা হয় সেই মাধ্যমকেই বেছে নিন।
১) আপনার শহরের বাইরের গ্রাহকের
কাছে পণ্য পৌঁছাতে কুরিয়ার সার্ভিস ব্যবহার করুন। এতে পণ্য সঠিক স্থানে পৌঁছে যাবে
নিশ্চিত।
২) আপনার গ্রাহক যদি হোম
ডেলিভারি সুবিধা চায় তাহলে সেক্ষেত্রে আপনার বিশ্বস্ত মাধ্যমে হোম ডেলিভারি দিন।
৩) যদি আপনার বাজেটে
সংকুলান হয় তবে নিজের লোক দিয়েও আপনি ডেলিভারির কাজটি সারতে পারেন।
৪) পণ্য অর্ডার করার পর পৌঁছাতে
যেনো বেশি সময় না নেয় তা অবশ্যই লক্ষ্য রাখুন।
আপনার পেইজ বা সাইটটিকে সফল করে তোলার ক্ষেত্রে গ্রাহকের সন্তুষ্টি জড়িয়ে আছে অনেকখানি। তাই উপরে বর্ণিত বিষয়গুলো মনে রাখার চেষ্টা করুন । আপনার পেইজের বা সাইটের মার্কেটিং করার পর গ্রাহককে হ্যান্ডেল করার ক্ষেত্রে আপনাকে এ বিষয়গুলো সাহায্য করবে।