ই-কমার্স ব্যবসায় অন্যান্য
বিষয়ের মতো কন্টেন্ট মার্কেটিং একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি ওয়েবসাইট তৈরী করা,
এটিকে নিরাপদ ও ব্যবহারযোগ্য করা,সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজ করা - এগুলো ওয়েবসাইটকে সবার
কাছে পরিচিত করে তুলে। ‘কন্টেন্ট মার্কেটিং’ হল ওয়েবসাইটের মার্কেটিং করার একটি
মাধ্যম।
বাজারে যখন নতুন কোনো
পণ্য আসে তখন সবাই সেটিকে চিনতে পারেনা যতক্ষন না পণ্যের মার্কেটিং করা হয়। মার্কেটিং
করার সনাতন নিয়ম ছিলো সরাসরি পণ্য দেখিয়ে, মাইকিং করা, লিফলেট বিতরণ –ইত্যাদি।
কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপরই সবাই জোর দেয়। যার কারন সনাতন পদ্ধতির
তুলনায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে খরচ ও সময় দুটোই সাশ্রয়ী । ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অংশ
হল কন্টেন্ট মার্কেটিং।
কন্টেন্ট মার্কেটিং বলতে
পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত লেখা ও ছবি বা ভিডিও দিয়ে প্রকাশ করা। অনলাইনে পণ্যের ছবি
বা ভিডিও হতে হয় বাস্তবিক। কারন অনলাইনে গ্রাহক পণ্য কিনে ছবি বা ভিডিও দেখে,
এখানে সরাসরি পণ্য দেখে কেনার কোনো সুযোগ নেই। ওয়েবসাইটে পণ্য নিয়ে বিস্তারিত
লেখা, বর্ণনা দেওয়া এবং ভালো খারাপ দিকগুলো তুলে ধরা প্রয়োজন। কন্টেন্ট এর ৮০% হতে হয় বিষয় নিয়ে বিস্তারিত
আলোচনা আর ২০ % হতে হয় ওয়েবসাইটের প্রোমোটিং।
কন্টেন্ট মার্কেটিং করার
কারণগুলো হলঃ
১) মানুষ আগে এড বা বিজ্ঞাপন দেখার প্রতি আকৃষ্ট হলেও এখন আর
হয়না। এখন আর এড আসলেও ক্লিক করেনা। অনেকেই এড ব্লক করার চেষ্টাও করে থাকেন নানা
সিস্টেম ব্যবহার করে। তাই এড বা বিজ্ঞাপনের বিকল্প হচ্ছে কন্টেন্ট মার্কেটিং।
২)ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট গ্রাহকদের কাছে উপকারী বা ইনফরমেটিভ হতে হবে।
তাহলে গ্রাহকরাই কন্টেন্ট শেয়ার করবে যা
আপনার ওয়েবসাইটকে অন্যদের কাছেও তুলে ধরবে।
৩)বিনামূল্যে সেবা পেতে
প্রত্যেকেই ভালবাসে। যা নিয়েই কন্টেন্ট লিখা বা তৈরী করা হোক না কেন তাতে গ্রাহকদের
জন্য কিছু টিপস বা জ্ঞানমূলক বিষয় থাকতে হবে। এতে গ্রাহকরা খুশি হবে অজানা বিষয়কে
জানতে পেরে ।
৪)কন্টেন্ট মার্কেটিং
মানে এই নয় যে আপনার লেখা পড়েই আপনার প্রোডাক্ট কেউ কিনে নিবে। আপনি হয়তো ভাবতে
পারেন তাহলে কন্টেন্ট তৈরী করাটাই বৃথা। না, মোটেও নয়। কারণ আপনার পণ্য গ্রাহকদের
আকৃষ্ট করতে সময় নিলেও আপনার লেখা বা ইনফরমেটিভ কন্টেন্টটি অবশ্যই তাদের মনোযোগ
আকর্ষন করতে পেরেছে। আপনার ওয়েবসাইটের প্রতি তাদের আকর্ষন বেড়েছে।
৫) একটি বিজ্ঞাপন এর তুলনায় একটি কন্টেন্ট বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয়।
বিজ্ঞাপন কিছুদিন শো করে এবং একসময় আর শো করেনা। কিন্তু কন্টেন্ট তৈরী করলে যখন
ইচ্ছা সার্চ দিয়ে খুঁজে পাওয়া যায়।
৬) সনাতন পদ্ধতিতে
মার্কেটিং করার তুলনায় কন্টেন্ট মার্কেটিং
অনেক সাশ্রয়ী।
৭) একটি পণ্য নিয়ে কন্টেন্ট
তৈরী করা মানেই এই নয় যে পণ্য বিক্রয় হবে। গ্রাহকরা কন্টেন্ট পড়ে বা দেখে পণ্য বা
বস্তুটি সম্পর্কে ধারণা নেন। অনেকে পণ্য কিনে,অনেকে কিনেনা আবার অনেকে পরে কেনার
জন্য ওয়েবসাইটকে মনে রাখেন। এই মনে রাখার জন্যই আকর্ষণীয় কন্টেন্ট তৈরী করতে হবে।
৮) কন্টেন্টের লেখা পড়ে অথবা ছবি বা ভিডিও দেখে
গ্রাহকরা আকৃষ্ট হয় । এতে সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইটের র্যাংকিং বাড়ে।
কন্টেন্ট মার্কেটিং এর
ক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো অবশ্যই মনে রাখবেন-
১) যেহেতু সবাই এখন
ডিজিটাল মার্কেটিং এর দিকে ঝুঁকছে তাই কন্টেন্ট মার্কেটিং এ প্রতিযোগীতা অনেক বলা
যায়।
২) যেহেতু প্রতিযোগীতার
বাজার তাই কন্টেন্ট হতে হবে Unique,
Informative এবং Helpful. সব মিলিয়ে অনেক কিছু
চিন্তা করেই কাজ করতে হবে।
৩) খরচ কম হলেও কন্টেন্ট
মার্কেটিং এ শ্রম ও সময় দুটোই বেশি দেয়া লাগে
৪) আপনার তৈরী করা কন্টেন্ট কতটা সফল তা পরিমাপ করাটা এক্ষেত্রে
কঠিন।
৫) কন্টেন্ট যেন গ্রাহকের কাচে কোনোভাবে
বিরক্তির কারণ না হয় তা খেয়াল রাখতে হবে।
৬) একটি ওয়েবসাইট যখন
প্রতিষ্ঠিত হয় মানে সবার কাছে পরিচিত হয় তকন সাইটের একটি রেপুটেশন তৈরী হয়। সস্তায়
মার্কেটিং করার চিন্তাও বাদ দেয়া উচিত।
সস্তা মার্কেটিং সাইটের অর্জিত সম্মানকে অনেকখানি কমিয়ে দিতে পারে।
৭) কাস্টমার বা গ্রাহক
যাই বলিনা কেন, তাদের সাথে মাঝেমাঝে নিজে থেকেই যোগাযোগ করতে হবে।
উপরোক্ত প্রত্যেকটি বিষয় একটি ওয়েবসাইটকে সফল ও গ্রাহকের কাছে পছন্দের করে তুলতে যথেষ্ট।