জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে এখন সবাই ব্যস্ত। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে রুটি তৈরি করার মতো সময় হয়ে উঠেনা অনেকেরই । রান্নাঘরের কাজকে সহজ করার জন্য আছে নানা ধরনের গ্যাজেট । টোস্টারও সেরকম একটি কিচেন গ্যাজেট।
টোস্টার দিয়ে পাউরুটি টোস্ট করে খেতে যেমন মজা তেমনি কাজটাও সহজে শেষ হয়। টোস্ট করলে পাউরুটিতে থাকা জীবানু ও ধ্বংস হয়ে যায়।
টোস্টারের উৎপত্তি ঃ
১৮৯৩ সালে সর্বপ্রথম অ্যালান ম্যাকমাস্টার এবং ব্রিটিশ অধিবাসী ক্রমটন স্টেফনে জে টোস্টার তৈরি করেন। কিন্তু তাদের উদ্ভাবনীতে সামান্য ভুল ছিলো তারা হিটিং এলিমেন্ট এ আয়রনের তার ব্যবহার করেছিলো। ফলে তারটি গলে যেতো এবং স্পার্ক সৃষ্টি হতো। পরবর্তীতে সফলভাবে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ১৯০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রস্থ জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানির একজন টেকনিশিয়ান ফ্রাংক শেইলর ইলেকট্রিক টোস্টার তৈরি করেন। অবশ্য সেই সময়ের টোস্টার ছিল সম্পূর্ণ নন-অটোমেটিক অর্থাৎ এক সাইড টোস্ট হওয়ার পর হাতের সাহায্যে টোস্ট বের করে নিয়ে আসতে হতো।কিন্তু বর্তমানে স্বয়ংক্রিয় টোস্টার পাওয়া যায়। হাত দিয়ে ধরার প্রয়োজন হয়না।
টোস্টারের ধরণঃ
টোস্টার মূলত দুই রকম পাওয়া যায়। অটোমেটিক ও নন-অটোমেটিক টোস্টার। আবার গঠন ও কার্যক্রম অনুযায়ী টোস্টার চার ধরনের হয়- পপ-আপ টোস্টার, পপ-ডাউন টোস্টার, ওভেন টোস্টার, কনভেয়র টোস্টার। নন –অটোমেটিক টোস্টার-এ থার্মোস্ট্যাট থাকেনা বিধায় এতে রুটি অনেকসময় পুরোপুরি সেঁকা হয়না। এ ধরনের টোস্টারে পুশ-টু-অন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।টোস্টারের স্যুটগুলোতে পাউরুটির স্লাইস রাখার পর তা ড্রপিং লিভার এ গিয়ে পড়ে এবং ফিলামেন্ট সাপ্লাই অন হয়ে যায়। পাউরুটি সেঁকা হয়ে গেলে কিছু দিয়ে তুলে নিতে হয়। লিফটিং লিভার পাউরুটি উপরে উঠে আসার পর টোস্টার অফ হয়ে যায়। থার্মোস্ট্যাট না থাকায় পাউরুটি সেঁকার সময়টা বুঝা যায়না। অনেক সময় পাউরুটি বেশি সেঁকা হয়ে যায় বা পুড়েও যেতে পারে।
অটোমেটিক টোস্টারের প্রধান প্রধান অংশগুলো হচ্ছে- (ক) অটোমেটিক পপ-আপ সিস্টেম; (খ) হিটিং এলিমেন্ট বা ফিলামেন্ট; (গ) থার্মোস্ট্যাট; (ঘ) ক্লক টাইমার এবং (ঙ) ইলেট্রোম্যাগনেট। এতে পাউরুটি সেঁকার পর এটি নিজে থেকেই উপরে উঠে আসে এবং ফিলামেন্ট অফ হয়ে যায়। ফলে পাউরুটি বা টোস্টটি আর পুড়ে যায়না। এতে ক্লক টাইমার ও থার্মোস্ট্যাট থাকায় নির্দিষ্ট সময় সেট করে দিয়ে এটিতে পাউরুটি সেঁকা যায়। আর ইলেকট্রোম্যাগনেট থাকায় টোস্টারের কার্যক্রম চলাকালীন পপ-আপ লিভারকে হোল্ডে রাখে। নির্ধারিত সময় শেষ হলেই। ইলেকট্রোম্যাগনেট ডি-এনার্জাইজড হয় ও পপ-আপ লিভারটি আবার পূর্বস্থানে চলে যায়। বর্তমানে অটোমেটিক টোস্টার বেশি ব্যবহার করা হয়।
টোস্টারের যত্নঃ
টোস্টার পরিষ্কার করতে হয় নিয়মিত। অন্তত সপ্তাহে দু-একবার অবশ্যই করতে হবে। টোস্টার পরিষ্কার করার নিয়মাবলীঃ
১) প্রথমে লক্ষ্য করুন টোস্টারটি ঠান্ডা আচে কিনা। খুব ভাল ভাবে ঠান্ডা করে নিন। সুইচ অফ করতে ভুলবেন না।
২)টেবিলে বা সমতল কোনো অবস্থানে টোস্টারটি রেখে এর ব্রেড ট্রে টি বের করে নিন। ট্রে তে থাকা ব্রেড ক্রাম্ব ফেলে পরিষ্কার করে নিন। যদি ট্রে না থাকে তাহলে টোস্টারকে উলটে ব্রেড ক্রাম্ব পরিষ্কার করে নিন।
৩) যদি টোস্টারের ট্রে থেকে ব্রেড কাম না যায়, তাহলে সাবান মেশানো গরম পানিতে ট্রে দুটি ভিজিয়ে রাখুন। এর পর ভালো করে ঘষে পরিষ্কার করে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এবার তোয়ালে দিয়ে মুছে শুকিয়ে নিন।
৪)ব্রাশ দিয়ে ট্রের উপরিভাগ পরিষ্কার করে তোয়ালে দিয়ে মুছে দিন।
৫)তোয়ালেতে অল্প ভিনিগার মিশিয়ে ট্রে মুছে দিন এতে টোস্টার ঝক ঝক করবে।
৬)সবশেষে ট্রে পুনরায় স্থাপন করে দিন।
যেকোনো জিনিসের টিকে থাকা যত্নের উপর নির্ভর করে। ইলেকট্রনিকস জিনিসের যত্ন করাটা আরো বেশি জরুরি। টোস্টারে কাজ করা শেষ করা হলে ঠান্ডা করার পর পুনরায় একটি কাপড়ে মুড়ে রাখতে হবে যাতে তেলাপোকা আক্রমন না করে।
বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের টোস্টার আছে। তবে গুণগত মান ও গঠনের উপর নির্ভর করে দেশীয় পণ্য Walton এর টোস্টার সেরা। Osellers থেকে ওয়ালটন ব্র্যান্ডের টোস্টার
কিনে বুঝে নিন নিশ্চিত ক্যাশব্যাক!